সকালের চটপট নাস্তা হোক বা দুপুরের ভারী খাবার, তাড়াতাড়ি বানাতে আধুনিক গৃহিণী দের প্রথম পছন্দ ইন্ডাক্সন ওভেন।

সকালের চটপট নাস্তা হোক বা দুপুরের ভারী খাবার, তাড়াতাড়ি বানাতে আধুনিক গৃহিণী দের প্রথম পছন্দ ইন্ডাক্সন ওভেন।
মূলত শহরে ব্যবহার হলেও আজ কাল গ্রামে গঞ্জেও বাড়ছে এর ব্যবহার। ঝামেলা বিহীন কিউট একটা প্লেট মাত্র। আর তাতেই কেল্লাফতে। ভাবছেন আমি কি টেকনোলজি ছেড়ে এবার রান্না শেখাতে এসেছি? না না মোটেও তা নয়। এবার তা হলে কাজের কথায় আসি।
দেখতে যতই সুন্দর হোক এর ভিতরের কাজ কারবার কিন্তু এতটা সহজ নয়।নিরবে কাজ করে চলে জটিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
প্রথমেই বলে রাখি এটা কিন্তু কোনো নতুন টেকনোলোজি নয়।প্রথম পেটেন্ট হয় ১৯০৯ সালে।

একটা মজার জিনিস হল, এই ওভেনে শুধুমাত্র মেটাল পট টাই গরম হয়। অন্য কিছু কিন্তু হয় না। আপনি একটা বই অথবা কাপড় প্লেটের উপর রেখে দেখুন,দেখবেন গরম হচ্ছে না,এবার একটা এক টাকার কয়েন রেখে দেখুন কেমন গরম হচ্ছে।
কিন্তু কেন এমন টা হয়??
একটা ফেরোম্যাগ্নেটিক মেটেরিয়াল কে যদি অল্টারনেটিং ম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের মধ্যে রাখা হয়,তা হলে ইন্ডাক্টেন্স এর কারনে ওই মেটালের ভিতর একরকম বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।একে বলে এডি কারেন্ট।মেটালের রেজিস্ট্যান্স ওই কারেন্ট কে বাধা দেয় এর ফলে হিটারের মতো ওই মেটাল গরম হয়ে ওঠে। মেটাল না রেখে যদি অন্য কিছু রাখা হয় তা হলে এই এডি কারেন্ট ইন্ডিউস হয় না।কাজেই গরম হবার কোনো প্রশ্নই থাকেনা।
ওভেনের ভিতর এই অল্টারনেটিং ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড তৈরি করতে একটি জটিল ইলেক্ট্রনিক সার্কিট ব্যবহার করা হয়। ফ্রীকোয়েন্সি ২০ কিলো হার্তজ থেকে ১০০ কিলো হার্তজ হয় সাধারনত।
অনেক ওভেনে এইরকম একটা ফিচার থাকে যে,কোনো কিছু প্লেটের উপর না থাকলে অটোমেটিক ওভেন অফ হয়ে যায়।
একটা মাইক্রোকন্ট্রোলার কনজিউমড পাওয়ার ক্যালকুলেশন করে এই কাজ টা করে থাকে।
একটি সাধারণ হিটারের থেকে এটা অনের এনার্জি এফিসিয়েন্ট।
যাই হোক সবার এই সব বুঝে কাজ নেই। কিন্তু রান্না করার সময় কিছু সতর্কতা আপনাকে নিতেই হবে-
১।কোনো হার্ট পেসেন্ট কে ওভেনের কাছে যেতে দেবেন না বিশেষ করে যাদের পেসমেকার আছে। ইন্টারফেয়ারেন্স পেসমেকার কে বিকল করে দিতে পারে।
২। স্টিলের খুন্তি ব্যবহার করবেন না, এতে ইন্ডাক্টিভ লিকেজ কারেন্ট আপনার দেহে আসবে।আপনি ও রেডিয়েশন এর শিকার হতে পারেন। কাঠের ব্যবহার করুন।
৩। প্লেটের দিকে বেশী ঝুঁকে রান্না করবেন না,যতটা সম্ভব দূর থেকে করার চেষ্টা করুন।
৪। রান্না সময় বুক পকেটে মোবাইল রাখবেন না।
৫। রেডিও টেলিভিশন ওভেন থেকে দূরে রাখুন।
  প্রথমবার যখন ওভেন সারাই দারুন শক খেয়েছিলাম, এখনো মনে আছে।ভিতরে অনেক বড় বড় ক্যাপাসিটর থাকে।এগুলো চার্জ স্টোর করে রাখে। সাপ্লাই অফ থাকলেও এগুলো থেকে শক খাবার সম্ভবনা প্রবল।
যাক এসব বেরসিক কথাবার্তা।
এখন বলুন তো কে কে ভালো রান্না করতে পারেন। এখনকার মেয়েরা শুনি ভালো রান্না করতে পারেনা। কি জানি নিজেকেই রান্না করে খেতে হবে মনে হয়।
আজ এই পর্যন্তই।
কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
নলেজ ভাগ করলে বাড়ে, তাই চাইলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে। আগামি পর্বের জন্য নজর রাখুন আমাদের পেজে।
শুভকামনা সবার জন্য।
(জ্যোৎস্না ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স)

Comments